ধনী হতে চাইলে মেনে চলুন ৮ উপায় সফলতা আসবেই

জীবনে সবচেয়ে বড় হতে চাইলে বা ধনী হতে চাইলে যেশুধু টাকার পেছনে দৌড়াবেন সেটা কিন্তু নয়। সবার আগে ঠিক করুন আপনি আসলে কোন ধরণের ধনি হতে চাচ্ছেন। টাকাওয়ালা ধনি নাকি মানুষ হিসেবে ধনী অর্থ্যাৎ মানুষ হিসেবে অনেক বড়। তবে আপনি যেটাই হতে চান, পরিকল্পনার কোন বিকল্প নেই।

বিল গেটসের একটা ঘটনমা বলি। বিল গেটস তার ছাত্রদের সঙ্গে কিছু কথা শেয়ার করার পর যখন বিলের বক্তৃতা শেষ হল, তখন হঠাত্‍ই তাঁর পকেট থেকে ১০ ডলার পরে গেল। বিল কিন্তু সে টাকাটা কুড়োলেন না। সবাই তখন অবাক হয়েছিলেন। বিল কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ওই টাকা কুড়োতে যত সময় খরচ হল, ওই সময় ব্যয় করে তিনি তার চেয়ে বেশি টাকা রোজগার করতে পারেন। তাই বলবো নিজেকে তৈরি করুন। শুধু টাকার পিছনে ছুটবেন না। বরং আপনি যেটা করতে চান সে বিষয়ে পড়াশোনা করে জ্ঞানার্জন করুন। এছাড়াও কিছু নিয়ম মেনে চলুন।

১) ব্যবসা করে বড় কিছু করতে হলে ধাপে ধাপে ওঠার চেষ্টা করুন। লাভের টাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগ করুন। একটা ব্যবসায় আটকে না থেকে ধীরে ধীরে অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন। চাকরি করে বড়লোক হতে হলে আগে টিম লিড করতে শিখুন। কাজের পাশাপাশি নতুন আইডিয়া নিয়ে আসুন। অফিসের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বসকে নিজের কাজের ভাল দিকটা বোঝানোর চেষ্টা করুন।

২)ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা ভাল। কারণ কোনও কিছু করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। তবে আগে করতে হবে সঠিক পরিকল্পনা। ডায়েরিতে সময় ঠিক করে পরিকল্পনা করুন। ধরুন লিখলেন এক বছরের মধ্যে এক লাখ টাকা জমাতে চান। তারপর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ। দশ মাস পর হিসেব করে নিন পরিকল্পনা ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না।

৩) সময় অপচয় না করে কাজে লাগান, বিনিয়োগ করার আগে ভাবুন-দিনের ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করে নিন। রোজগার করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করতে হবে সময় পরিকল্পনা। ধরা যাক আপনি চাকরি করেন। মানে ৯-১০ ঘণ্টা আপনি কাজে ব্যস্ত, তারপরের সময়টা কাজে লাগান। ছোট কোনও ব্যবসা থেকে শুরু করুন। টিউশনিও খারাপ অপশন নয়। যে অতিরিক্ত সময়টা কাজ করছেন সেই টাকাটা বিনিয়োগ করুন। ভুলে যাবেন না বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু হয়।

৪) চোখ কান খোলা রাখুন, রোজগারের পন্থা আসতে পারে যে কোনও জায়গা থেকে– তাই সব সময় চোখ কান খোলা রাখুন। যে কোনও আলোচনা থেকে বড় কোনও রোজগারের একটা দিশা তৈরি হতে পারে। কখনও ভাববেন না ওটা আমার কাজ নয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ পর্যন্ত বলেছেন, চোখ কান খোলা না থাকলে তিনি কখনই ফেসবুক খুলতে পারতেন না।

৫) পড়াশোনা, কোর্স করে নিজের যোগ্যতা বাড়ান, এতে পদোন্নতি হবে সবদিকে– পড়াশোনা চালিয়া যান। আপনার যা যোগ্যতা সেটা সবসময় বাড়িয়ে চলুন। বিএ পাশ হলে এমএ করুন। মাস্টার ডিগ্রি থাকলে পিএইচি করুন। যুগপোযোগি কোর্স করুন। এতে একদিকে আপনার সিভি ভারী হবে, আপনার যোগ্যতা বাড়বে।

৬) পছন্দমত চাকরি পেয়েছেন বলে আত্মহারা না হয়ে বরং তা গুরুত্ব দিন। ধরুন আপনি চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাহলে চেষ্টা করুন এই কাজের সেরা জায়গায় কাজ করতে। এটা ঠিক যোগ্যতা থাকলে যে কোনও জায়গা থেকে উজ্জ্বল হওয়া যায়। তবে এটাও ঠিক অনেক সময় পেশাদার আবহ আপনার কাছ থেকে সেরাটা বের করে নেয়। তাই একেবারে সেরা জায়গায় কাজ করলে আপনার সেরাটা দেওয়া যায়। তাই সেরাটা পাওয়ায় যায়।

৭) একই চাকরিতে বছরের পর বছর আটকে না থেকে ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান– বছরের পর বছর একই কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু এই কথা ভেবে ‘যাক চলে যাচ্ছে, রোজগার তো করছি, খেতে তো পাচ্ছি’। এভাবে না ভেবে সুযোগ তৈরি করুন, সুযোগ কাজে লাগান। কোম্পানি পরিবর্তন করলে একদিকে মাইনে, পদ বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে আত্মবিশ্বাস, আসে নতুন কিছু করার মানসিকতা। তাই ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান।

৮) খরচের জায়গাগুলো একটু ভাল করে খেয়াল করুন–আপনি হয়তো ভাল রোজগার করছেন। কিন্তু মাসের শেষে দেখছেন সেই ভাঁড়ে মা ভবানি অবস্থা। তাহলে এক কাজ করুন দেখুন তো আপনার খরচগুলো ঠিক কোথায় কোথছায় হচ্ছে। আচ্ছা, আপনার লাইফস্টাইলটা কী একটু বড়লোকি হয়ে যাচ্ছে না। হয়তো এর চেয়ে একটু কম খরচ হলেও আপনার চলে যায়। এসবই আপনি বুঝতে পারবেন যদি খরচের জায়গাগুলো একটু লিখে রাখেন। দেখবেন পরে চোখ বোলালে বুঝবেন কোন জায়গাগুলো একটু চেক করতে হবে। এছাড়াও ব্যতিক্রমি কিছু ব্যবসা-বিনিয়োগের কথাও ভাবতে পারেন। তবে ব্যবসা বা যেটাই করুন না কেন সে বিষয়ে জ্ঞানার্জন না করে হাত না দেয়ায় ভালো